প্রেমের সম্পর্কে হিন্দু যুবক খুন।

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক মুসলমান মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণে নয়ন কুমার সরকার (২২) নামে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নয়ন ইউনিয়নের নন্দনালপুর গ্রামের যগেশ কুমার সরকারের ছেলে ও আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। নিহত নয়নের পরিবারের দাবি, এক মুসলমান মেয়ের সাথে সম্পর্ক থাকার কারণে, ঐ মেয়ের স্বজনরা নয়নকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তাঁর সারা শরীরে রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার মধ্যরাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন কলেজছাত্র নয়ন কুমার সরকার। পরিবারের সদস্যরা সারা রাত খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও পায়নি তাকে। এরপর ভোরে মোবাইল ফোনে খবর আসে নন্দনালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ নতুনপাড়া মাঠের মধ্যে সড়কের পাশে নয়ন রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে আছেন। খবর পেয়ে স্বজনেরা দ্রুত ছুটে যান এবং আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। সেখানকার চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। দুপুরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নয়নের বাবা যগেশ কুমার সরকার বলেন, “ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাকের ভাতিজির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নয়নের। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে নয়নকে শাসন করেছিলাম। হয়তো ওই মেয়ের পরিবারের সদস্যরাই ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি উপযুক্ত বিচার চাই।”

নয়নের বোন লতা রানী বলেন, “ওরা ভাইকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা বিচার চাই।”

এ বিষয়ে নন্দনালপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর শাহীনুর রহমান বলেন, “সকালে সড়কের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল নয়ন। তার সারা শরীরের জখম ছিল।”

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে আবদুর রাজ্জাকসহ তার ভাইয়ের পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলম বলেন, “গুরুতর আহত অবস্থায় ভোর ৬টার দিকে নয়নকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ভর্তির কিছুক্ষণ পরই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হয়।”

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান,” নয়নের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। যেহেতু, মরদেহে আঘাতের চিহ্ন আছে, তাই প্রাথমিকভাবে এটাকে হত্যা বলে মনে করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রস্তুতি চলছে।”