হোসাইনি চেতনায় সমুজ্জ্বল হযরত গাউছুল আজম এর তরিক্বত – অধ্যক্ষ মোর্শেদে আজম

পবিত্র শোহাদায়ে কারবালা স্মরণে চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের ৭০তম পবিত্র আশুরা মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (০৮ আগস্ট) চট্টগ্রামের বায়েজিদ গাউছুল আজম সিটির কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ কমপ্লেক্স ময়দানে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এতে মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মোর্শেদ, আওলাদে রাসুল (দ.) হজরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব।

উপস্থিত হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি বলেছেন, কাগতিয়া দরবার শরীফের মোর্শেদে আজম বলেন প্রিয় রাসুল (দ.) এর রেখে যাওয়া দ্বীনের উপর যতবার আঘাত হয়েছে ততবারই ইসলাম ফিরে এসেছে বিজয়ের মহাবারতা নিয়ে। ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম ও ঘৃনিত কাজ হলো কারবালার প্রান্তরে আওলাদে রাসুলগণের উপর চালানো বর্বরতা। প্রিয় নবীজির দৌহিত্র ছৈয়্যদুনা হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর রক্তস্রুত আল্লাহর এ জমিনে ইসলাম থাকবে আপন মহিমায়।

আমাদের জানা আছে যুগে যুগে একদল হোসাইনি চেতনায় উজ্জিবীত থাকবে অন্যদল ইয়াজিদী ধারণা নিয়ে ফেতনা ফ্যাসাদের জন্ম দেবে। কালেকালে যারা হক্বের উপর অবিচল ছিল তারাই নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। বস্তুতপক্ষে আঘাত সহ্য করে নবীজির দামান আঁকড়ে ধরে দ্বীনকে বুকে ধারণ করা হযরত হোসাইন (রাঃ) এর শিক্ষা, যে সুন্নাতের বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে হযরত গাউছুল আজম এর তরিক্বতে। অর্থাৎ হোসাইনি চেতনায় সমুজ্জ্বল হযরত গাউছুল আজম এর তরিক্বত।

তিনি আরও বলেন, হযরত হোসাইন (রাঃ) সর্ম্পকে প্রিয় রাসুল (দ.) বলেছেন “হোসাইন আমি হতে, আমি হোসাইন হতে। যে হোসাইনকে ভালোবাসবে আল্লাহ তাকে ভালোবাসবে”। প্রিয় রাসুল (দ.) কতটা ভালোবাসলে এমন ঘোষণা দিতে পারেন তা ভাষায় প্রকাশের মত নয়। এমন মহান আওলাদে রাসুল (দ.) এর শাহাদাত বরণ শুধুমাত্র উম্মতে মুহাম্মদীর নাজাতের জন্য।

পবিত্র এই রক্ত মোবারকের সাদকায় কাল হাশরের ময়দানে প্রিয় নবী মোস্তফা (দ.) উম্মতের গুনাহের জন্য সুপারিশ করবেন। আমাদের ঈমানী চেতনার দাবি হলো আহলে বাইতকে মুহাব্বত করা। হযরত গাউছুল আজম (রাঃ) প্রিয় নবীজির এমন এক আশেক উনি নিজে যেমন নবীজি ও আহলে বাইতকে ভালোবাসেন তেমনি তিনি তাঁর অনুসারীদের দিয়ে সেই ভালোবাসা চিরদিন অনুশীলন ও হৃদয়ে ধারণ করার জন্য এমন এক মহান তরিক্বত জগতবাসীর জন্য আল্লাহ ও রাসুল (দ.) এঁর দরবার হতে কেঁদে কেঁদে খুঁজে নিয়েছেন, যে তরিক্বতে প্রতিদিন ১১১১ বার প্রিয় নবীজির উপর মুহাব্বতের নিয়্যতে দরূদ শরীফ পাঠ করা হয়, কখনো ক্বাজা হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদায় করে দিতে হয়। শুধু তাই নয় তরিক্বতের নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছে আহলে বাইতের উপর ১২৫ বার দরূদ শরীফ পাঠ করতে হয়। আহলে বাইতকে ভালোবেসে দরূদ শরীফ আদায়ের এমন আমল তরিক্বতের ইতিহাসে বিরল।

মাহফিলে অনান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুর, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা মুহাম্মদ শফিউল আলম, মাওলানা মোহাম্মদ এরশাদুল আলম, হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আবু বকর প্রমূখ।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দিন-রাত ব্যাপী গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বাদে যোহর খতমে কুরআনে করিম ও পবিত্র শোহাদায়ে কারবালা শীর্ষক আলোচনা, বাদে আছর- তরিক্বতের বিশেষ পদ্ধতিতে ফয়েজে কোরআন প্রদান, বাদে মাগরিব- মোরাকাবা, জিকিরে গাউছুল আজম মোর্শেদী এবং বাদে এশা- মাননীয় মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলীর তকরির মোবারক।

মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।