সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি ইন্সুইরেন্স কোম্পানী চালু করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি হওয়ায় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জেনিথ ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান।
গতকাল বুধবার (২৪ আগস্ট) দুবাইয়ে বাংলা এক্সপ্রেস মিডিয়ার সাংবাদিক ও পরিচালক টিমের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আগ্রহ প্রকাশ করেন। আব্দুল্লাহ আল শাহীনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অংশ নেন বাংলা এক্সপ্রেসের নির্বাহী সম্পাদক মামুনুর রশীদ, আলফা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী অভী, ট্রাস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্সুইরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম সিদ্দিক, আমিরাতের ব্যবসায়ী মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ইমাম হোসেন জাহিদ পারভেজ, সাংবাদিক এস এম মোদাসসের শাহ, জামিলুল কাইয়ুম রনি, স্বপ্না মনি, কানিজ ফাতিমা পপি, মুহাম্মদ নিয়াজ প্রমুখ।
জেনিথ লাইফ ইন্স্যুরেন্সে লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুজ্জামান বলেন, আমরা আজকের মতবিনিময় থেকে উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, প্রবাসীদের নিয়ে পলিসি চিন্তা করা উচিৎ। এখানে আমাদের কিংবা যেকোনো লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শাখা করার ব্যাপারে আইনি জটিলতাসহ বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ নিলে এটিও সম্ভব।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীমাকে গুরুত্ব দিয়ে বছরের একদিন বীমা দিবস ঘোষণা দিয়েছেন। সেদিন সারাদেশে দিবসটি উদযাপন করা হয়। এতে করে মানুষ আরও সচেতন হচ্ছেন৷ প্রবাসীদের জন্য আমিরাতে বাংলাদেশি ইন্সুইরেন্স কোম্পানির শাখা চালু সহজ করা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব৷ এটি হলে পরে আমরা বিশ্বাস করি প্রবাসীদের বড় একটি অংশকে ইন্সুইরেন্সের আওয়তায় আনা যাবে।
তিনি আরও বলেন, জেনিথ ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্সসহ দেশের প্রতিটি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাজের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে ইন্সুইরেন্সের গ্রাহক বাড়ছে৷ তবে, অনেকেই ইন্সুইরেন্স কোম্পানিকে এমএলএম ব্যবসা মনে করেন। এমন ভুল ধারণার কারণে এখনো কিছু মানুষ লাইফ ইন্স্যুরেন্স করতে চান না৷ অথচ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিটি মানুষের জন্য উপকারী। জেনিথ ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ইতোমধ্যে ১৪ কোটি টাকা গ্রাহককে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। প্রায় ৩ হাজার গ্রাহক যারা পলিসির অর্ধেক টাকা দিয়ে অসক্ষমতা দেখিয়েছেন বা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের টাকাও মুনাফাসহ দিয়েছে৷
বাংলা এক্সপ্রেসের নির্বাহী সম্পাদক বলেন, প্রবাসীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভাবনার এখনই সময়। রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি সচল করলেও প্রবাসীরা অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রবাসীদের সুযোগ সুবিধা আরও বাড়াতে হবে৷ দেশের মানুষ যেমনটা বিভিন্ন লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি করার সুযোগ পাচ্ছেন আমিরাতের প্রবাসীরা যেন এমন সুযোগ পান সেই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন৷
ব্যবসায়ী মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, সাধারণ প্রবাসীরা যা আয় করেন সবই পরিবারের জন্য দেশে পাঠিয়ে দেন৷ এই প্রবাসীরা দেশে ফেরত যান সম্পূর্ণ খালি হাতে৷ প্রবাসীর যদিব্ল একটি লাইফ ইন্স্যুরেন্স থাকে তখন অন্তত সেই টাকা দিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করে দিনাতিপাত করতে পারবেন৷ প্রবাসীদের জন্য আলাদাভাবে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর পলিসি চালু করা প্রয়োজন। প্রবাসীদের জন্য মাসিক অল্প টাকার পলিসিসহ চিকিৎসা সেবা অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা যায়।
সাংবাদিক এস এম মোদাসসের শাহ বলেন, লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসিতে প্রবাসীদের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের ব্যবস্থা থাকাটা জরুরি। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রবাসীরা দেশ থেকে আসার পূর্বে ইন্সুইরেন্স পলিসি গ্রহণ করলে প্রবাসে বাংলাদেশি মালিকানাধীন হাসপাতালে যাতে কম খরচে চিকিৎসা নিতে পারে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইমাম হোসেন জাহিদ পারভেজ বলেন, প্রবাসীদের লাইফ ইন্সুইরেন্সের আওতায় আনার পাশাপাশি সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে৷ আমিরাতে যদি দেশীয় লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির নিজস্ব কার্যালয় থাকে তাহলে প্রবাসীরা ইন্সুইরেন্সের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবে৷
জামিলুল কাইয়ুম রনি বলেন, দেশে বহুসংখ্যক বিভিন্ন প্রকারের ইন্সুইরেন্স কোম্পানী আছে৷ এসব কোম্পানির বিশ্বস্ততা প্রমাণে প্রবাসেও তাদের কার্যক্রম চালু করা উচিৎ।
স্বপ্না মনি বলেন, প্রবাসীদের কাছে লাইফ ইন্স্যুরেন্সের উপকারিতা সম্পর্কে জানান দিতে নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় লাইফ ইন্স্যুরেন্সের উপকারিতা নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা যায়৷