সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর হোসেনের দুই স্ত্রীর বসত বাড়িতে হামলা ও লুট-পাটের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার বাদশাগঞ্জ বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্টানে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সাজেদা বেগম ও তৃতীয় স্ত্রী আয়শা বেগম সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাঁরা বলেন, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নূর হোসেন ৩ স্ত্রী, ৬ ছেলে ও ২ মেয়েকে রেখে চলতি বছরের ৮ জুলাই মৃত্যু বরন করেন।
তবে তিনি জীবিত থাকাবস্থায়েই তাঁর বাড়ি-ঘরসহ সকল সম্পত্তি সমানভাবে ভাগবাটোয়ারা করে স্ত্রী সন্তানদেরকে দিয়ে যান। কিন্তু তাঁর প্রথম স্ত্রীর ৪ ছেলে তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তারা তার বাবা জীবিত থাকা কালীন সময় থেকেই তারা তার বাবাসহ আমাদের সন্তানদেরকেও অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল।
আর তখন তাদের নামে থানায় একাধিক অভিযোগও করা হয়েছিল। তাঁরা আরো বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর বড় সতীনের পুত্ররা আমাদের উপর আবারও লাগাতার হুমকিসহ নানানভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এমনকি তারা আমাদের বাড়ি- ঘর দখল করে নিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেয়। দ্বিতীয় স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, আমার একমাত্র ছেলে উদয় হাসান সে পুলিশের কনেস্টেবল হিসেবে সিলেটে কর্মরত আছে। সে তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে তার সৎ ভাইদের হুমকির ভয়ে বাড়িতে আসতে সাহস পায়না।
পরে এসব বিষয়ে চলতি বছরের ৩ আগষ্ট আমরা তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আমাদের এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাদের বিরুদ্ধে আমাদের বাড়ি-ঘর যাতে দখল না করতে পারে, সেজন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন।
কিন্তু তারা আদালতের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় আমার বড় সতীনের ৩ সন্তান সোহাগ, রাকিবুল ও সোহেলের নেতৃত্বে ৭-৮ জন লোক আমাদের বাড়িতে ঢুকে প্রথমেই তারা বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বসত ঘরে ঢুকে ভেতরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আমরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি বলেন, আমরা তাদের ভয়ে সন্তানদেরকে নিয়ে চরম আতংকে রয়েছি। তাই আজ আমরা এই সাংবাদিক সম্মেলণের মাধ্যমে তাদের অত্যাচার নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সোহাগ মিয়া বলেন, বাবার রেখে যাওয়া সকল সম্পত্তি ও জিনিস পত্রই সকল সন্তানের জন্যই সমান অধিকার রয়েছে। তবে তারা আমাদের বিরুদ্ধে আপনাদের কাছে যেসব মিথ্যা অভিযোগ করছেন, সেসব বিষয় সত্য না মিথ্যা তা আমাদের বাড়িতে এসে প্রতিবেশীদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জানতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, বিষয়টি শিঘ্রই তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।