নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদী বাজার আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন সড়কে কামরুল হাসান জোবায়ের (১৮) নামে এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করে। সোমবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জোবায়ের বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের আলাদীনগর এলাকার মো. কামাল উদ্দিনের ছেলে। সে নোয়াখালী আইডিয়াল পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সিভিল টেকনোলজির প্রথম বর্ষের ছাত্র। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে জোবায়ের দ্বিতীয়। জেলা শহরে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের চন্দ্রপুর গ্রামে আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় সপরিবারে ভাড়া থাকেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে সিনিয়র-জুনিয়র ইস্যুতে রাকিব নামের স্থানীয় এক কিশোরকে থাপ্পড় দেন জোবায়ের। তারই জের ধরে রাকিব ও তার দুই ভাই আহাদ, পিয়াসসহ আরো কিছু বখাটে মিলে জোবায়েরকে শায়েস্তা করার জন্য পাহারা দিতে থাকে। এমন খবর পাওয়ায় জোবায়ের বাসা থেকে বের হচ্ছিল না। হঠাৎ সন্ধ্যায় জোবায়েরের এক বন্ধু তাকে মুঠোফোনে বাসা থেকে ডেকে নেয়। বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর বাসার অদূরে রাকিব, আহাদ ও পিয়াসসহ আরো ১০-১৫ জন জোবায়েরকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে চলে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু পথে অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় স্বজনরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জোবায়েরের বড় বোন নাসরিন সুলতানা বলেন, আমার ভাই বাসায়ই ছিলো। লাদেন নামের তার এক বন্ধু মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ডেকে নেয়। এরপর জানতে পারি আমার ভাইকে ১০/১৫ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য মারধর ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। তারপর এলাকাবাসী ও আমরা তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করে। ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় তার মৃত্যু হয়।
জোবায়েরের মা জেসমিন আক্তার বলেন, তারা আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি সঠিক বিচার চাই। আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আকরামুল হাসান বলেন, আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি। আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত রাকিবসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও খোঁজা হচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।