প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পার হলেও ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য ‘মুক্তমঞ্চ’ পায়নি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে মুক্তমঞ্চ স্থাপনের দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলে নি।
সম্প্রতি মুক্তমঞ্চের দাবিতে আবারো সোচ্চার হয়েছেন নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। একাধিকবার দাবি জানানোর পরেও মুক্তমঞ্চ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ না করায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি গণসাক্ষর কর্মসূচিও পালন করছেন নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সময়ের পরিক্রমায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষার্থীদের বিচরণ তথা আড্ডা, গল্প, গান বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বৃহৎ পরিসরে আয়োজনের জন্য যথেষ্ট জায়গা বৃদ্ধি পায়নি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গেলে জায়গা সংকটে বেগ পোহাতে হয় আয়োজকদের। মুক্তমঞ্চ হলে একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামের ওপর চাপ কমবে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে পড়াশোনার একঘেয়েমি কিছুটা হলেও কাটবে। আর সেই সুযোগ করে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত মুক্তমঞ্চ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে, এমনটাই আশা করছে শিক্ষার্থীরা।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ আহমেদ সাকিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘কোনো কালচারাল অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য তারিখের পর তারিখ চেয়েও অডিটোরিয়াম পাওয়া যায় না। অথচ আমাদের যদি একটা মুক্তমঞ্চ থাকতো তাহলে এতসব জটিলতার মুখোমুখি হতে হতো না। ফরমাল আয়োজনগুলো অডিটোরিয়ামে আর যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মুক্তমঞ্চে আয়োজন করা যেত। কিন্তু জায়গা থাকার পরেও কেন করা হচ্ছে না এটা প্রশ্নের বিষয়।’
মুক্তমঞ্চ প্রসঙ্গে আযকা রহমান নামে আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ’কি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি মুক্তমঞ্চ, টিএসসির মত মৌলিক স্থাপনা, যেগুলো একটা সাধারণ কলেজেও থাকে সেগুলোর জন্য আমাদের আওয়াজ তুলতে হচ্ছে। আর অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কথা তো বাদই দিলাম।’
এদিকে মুক্তমঞ্চ স্থাপনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিনিকেতনে গণসাক্ষর কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছেন নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। সোমবার ১(০ অক্টোবর) থেকে দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচী শুরু হয়, যা আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) পর্যন্ত চলবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।
আয়োজকরা জানান, ক্যাম্পাসে মুক্তমঞ্চ স্থাপনের যৌক্তিক দাবিকে বেগবান করতে এবং শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি। অনেকেই এ দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন। আমরা আগামী ১৩ তারিখ পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো এবং প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি আমরা জেনেছি। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানালে আমরা আলোচনা করে মুক্তমঞ্চ স্থাপনের জন্য জায়গা নির্ধারণ করবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’