যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রভাবশালী নেতা ঋষি সুনাক। তবে তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ফলে যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার মধ্যকার তিক্ত সম্পর্কে ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন আসবে— এমন আশা করছে না ক্রেমলিন।
মঙ্গলবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভকে প্রশ্ন করেন— নতুন প্রধানমন্ত্রীর আমলে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা কতদূর।
উত্তরে পেসকভ বলেন, ‘নিকট ভবিষ্যতে (যুক্তরাজ্যের সঙ্গে) সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে কিংবা কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে— এমন কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখছি না।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাজ্যের ব্যাপক পক্ষপাতিত্বের দিকে ইঙ্গিত করে পেসকভ আরও বলেন, ‘রাশিয়া বরাবরই আলোচনার টেবিলে সবচেয়ে কঠিন ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত, কিন্তু অবশ্যই নিজেদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নয়।’
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের রাজা ৩য় চার্লস ৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাককে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন। এর মধ্যে দিয়ে ব্রিটেনের গত ২০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রেকর্ড খাতায় নাম উঠেছে সুনাকের।
তার আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে কম সময় ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রীর তকমা পেয়েছেন ট্রাস।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী বিশেষ অভিযান শুরুর সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বরিস জনসন। ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমা যেসব দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল, সেসবের মধ্যে ব্রিটেন ছিল একেবারে সামনের সারিতে। বরিস জনসনের এই ধারবাহিকতা নিজের স্বল্পতম মেয়াদের মধ্যেও বজায় রেখেছিলেন তার উত্তরসূরী লিজ ট্রাস।
ক্রেমলিনের ধারণা, নতুন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও এ ইস্যুতে তার পূর্বসূরীদের দেখানো পথেই হাঁটবেন।
লকডাউন উপেক্ষা করে মদের পার্টি ও অন্যান্য ইস্যুতে নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টি ও বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপিদের ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে গত জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বরিস জনসন। তারপর ৬ সেপ্টেম্বর বরিসের উত্তরসূরী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হওয়া লিজ ট্রাস পদত্যাগ করেন গত ২০ অক্টোবর।
উভয় প্রধানমন্ত্রীর বিদায়ের সময়ই উচ্ছাস প্রকাশ করেছিলেন রুশ সরকারি কর্মকর্তারা।