আফগান যুদ্ধে সামরিক দায়িত্ব পালনের সময় ব্রিটিশ প্রিন্স হ্যারি ২৫ জন তালেবান সদস্যকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তার স্মৃতিগ্রন্থ ‘স্পেয়ার’-এ। কিন্তু তালেবান প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দাবি করেছেন, ‘প্রিন্স হ্যারি আসলে নিরীহ আফগান মানুষকে হত্যা করেছিলেন।’
তালেবান নেতা আনাছ হাক্কানি শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ‘আমি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি প্রিন্স হ্যারি যেই দিনগুলোতে ২৫ মুজাহেদিনকে হত্যার কথা উল্লেখ করেছেন, আসলে হেলমান্দে আমাদের কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এটি স্পষ্ট বেসামরিক এবং সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘এই গল্পটি আফগানিস্তানে পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতির ২০ বছরে অনেক যুদ্ধাপরাধের একটি অংশ। এই ঘটনা তাদের দ্বারা সংগঠিত অপরাধের পুরো চিত্র নয়।’
এই তালেবান নেতা এর আগেও ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছিলেন।
আনাছ হাক্কানি প্রিন্স হ্যারিকে ইঙ্গিত করে আরও বলেন, ‘আপনি যা বলেছেন তা সত্যি, আপনার সেনা, সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের কাছে দাবার টুকরো ছিল আমাদের নিরীহ জনগণ। আর আপনি সেই খেলায় পরাজিত হয়েছেন।’
‘স্পেয়ার’-এ আফগান যুদ্ধে ২৫ তালেবানকে হত্যা করার কথা জানিয়েছেন এবং এই হত্যাকে ‘দাবার বোর্ড থেকে গুটি সরিয়ে দেওয়া’র সঙ্গে তুলনা করেন প্রিন্স হ্যারি।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ২০২১ সালের আগস্টে দেশটি ছেড়ে যায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাটো। এরপরই আশরাফ গণি’র সরকারকে জোরপূর্বক ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সরকার গঠন করে তালেবান। এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্ব। আফগানিস্তানজুড়ে প্রায় সময় বড় ধরনের হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এতে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিষিদ্ধ করে দিয়েছে তালেবান। কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে তাদের জন্য। এর বিরুদ্ধে তালেবানকে সতর্ক করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। সূত্র: আল জাজিরা