উচ্চ আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র এবং রাজউকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন না করায় তাদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং রাজউক চেয়ারম্যানকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
পরে মনজিল মোরসেদ জানান, ঢাকা শহরে রাস্তার পাশে ভবন তৈরিতে রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও অনেক ভবন মালিকেরা ওই গাড়ি পার্কিংয়ের নির্ধারিত জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/দোকান/বসবাস করে। তাদের গাড়িগুলোকে ভবনের সামনের রাস্তায় পার্কিং করায় ঢাকা শহরে মারাত্মক জ্যাম সৃষ্টি হয়।
সড়কে যানজট দূরীকরণে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী ছারোয়ার আহাদ চৌধুরী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্ট ৩০ দিন সময় দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে কার পার্কিংয়ের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন আদালত। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে আদালত বিবাদীদের (ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা) ছয় মাসের মধ্যে ভবনের কার পার্কিং এলাকা থেকে দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন। এবং এর খরচ মালিকের কাছ থেকে আদায়ের নির্দেশ দেন। রায়ে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতের এসব নির্দেশনা প্রতিপালন না হওয়ায় এইচআরপিবির পক্ষে নোটিশ প্রদান করা হয়। নোটিশে সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু যানজট নিরসনে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাইকোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করা হয়।