রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসরের পর কোনও পদে যাওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘এই পদের একটা মর্যাদা সবার রাখা উচিত। আমি বিশ্বাস করি দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে যত লোভনীয় কিছু হোক না কেন, সেখানে কোনও অবস্থাতেও যাওয়া ঠিক নয়। এটা করা হলে তা দেশের মানুষকে অপমান করা হবে। বেইজ্জতি করা হবে।’
বাংলাদেশের মানুষের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনও কাজে অবসরের পর যাবেন না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
রবিবার (১২ মার্চ) বঙ্গভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গণমাধ্যমকর্মীদের সম্মানে বঙ্গভবনে ডিনারের আয়োজনে অংশ নেন তিনি।
এ সময় তিনি অবসরের পর নিকুঞ্জের বাড়িতে থাকার ইঙ্গিত দেন। সেখানে তিনি সবাইকে বেড়াতে যাওয়ারও আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি আর ৪২ দিন দায়িত্বে আছেন বলেও জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের দেশে এ রকমও আছে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে দেখা গেল আবার মন্ত্রী হয়েছেন। আবার রাষ্ট্রপতির থেকে মন্ত্রী হওয়ার পর শুধু এমপিগিরিও করছেন। আবার এমপি নির্বাচনে নমিশেন না পেয়ে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যানে দাঁড়ায় গেল। হায়াত থাকলে হয়তো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও দাঁড়িয়ে যেতো। এটা হওয়া উচিত নয়। আমি যে অবস্থাতে চলি না কেন, এ দেশের মানুষের সম্মান ক্ষুণ্ন হোক এমন কোনও কাজে যাবো না।’
তিনি বলেন, ‘এই পদের একটা মর্যাদা সবার রাখা উচিত। এখান থেকে রেবিয়ে আর কিছু তার করা ঠিক নয়। আমি বিশ্বাস করি দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর যত লোভনীয় কিছু, সেখানে তার কোনও অবস্থাতেও যাওয়া ঠিক নয়। এটা করা হলে তা দেশের মানুষকে অপমান করা হবে। বেইজ্জতি করা হবে।’
সম্প্রতি প্রকাশিত আত্মজীবনী বইয়ে স্ত্রীকে নিয়ে লেখা একটি চ্যাপ্টারের প্রসঙ্গ টানেন রাষ্ট্রপতি। বইয়ের ওই অংশটি পুরোপুরি সত্য নয় বলেছিলেন তার স্ত্রী।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বইয়ে আমার বিয়ে সংক্রান্ত ব্যাপারে যা লিখেছি, তা সব ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন। আর বলেছেন আমি কিছু কথা লিখিনি। সমস্যা হচ্ছে যে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হলে এক রকম হয়। দেড়-দুই বছর থেকে জানাশোনা থাকলে যা হয়। সেখানে তো সমস্যা একটু থাকবে। কারণ তার দৃষ্টিভঙ্গি আমার দৃষ্টিভঙ্গি, তার কথা ও লেখায় একটু পার্থক্য তো থাকবেই। তবে আমি বলতে পারি আমি যা লিখেছি, ঠিক লিখেছি। তার হয়তো পছন্দ না-ও হতে পারে। সুতরাং সঠিক করে আর লেখার কিছু নেই। আমি যা লিখেছি সত্য লিখেছি। তার কাছে আমার এই কথাগুলো ভালো লাগেনি।’
অবসর সময়ে সাংবাদিকদের তার বাসায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘মাঝেমধ্যে কেউ এলে আমার সময়টা ভালো কাটবে। আর এখনকার মতো কথন তো এই আসা-যাওয়ার বাধাটা থাকবে না। একেবারে ফ্রি স্টাইল হয়ে যাবে। আমিও আপনাদের মতো হয়ে যাবো। সমস্যা থাকবে না।’