কৃষিজমি থেকে মাটি তোলা যাবে না

জাতীয় সংসদে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে। বিলের বিধান অনুযায়ী, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষিজমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। তবে, কোনো ব্যক্তি নিজ প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, চাঁদপুরের হাইমচরের সেলিম চেয়ারম্যান বালু তোলা নিয়ে ২০১৫ সালে একটি মামলা করেন। ২০১৮ সালে সেই মামলার রায় হয়। তিনি বালু তোলার অনুমতি পান। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন। এটা যদি হয়, বালু ব্যবস্থাপনার অবস্থা! সেলিম চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে কত বালু তুলেছেন, মন্ত্রী তা জানেন কি না, জানাবেন।

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, তড়িঘড়ি করে সংসদে ভূমির তিনটি আইন আনা হয়েছে। এই বিলগুলো নিয়ে সংসদ সদস্যরা পর্যালোচনারও সুযোগ পাননি। সরকার ইচ্ছে করে জনগণ থেকে আড়াল করে আইন করছে।

বিভিন্ন পত্রিকার খবর তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মাসোহারা নিচ্ছে প্রশাসন। এক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদেরও দায়-দায়িত্ব আছে।

জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জনস্বার্থে কাজ করছি। এই আইন কঠোর হস্তে প্রয়োগ করা হবে। বালু নিয়ে অনেক সমস্যা। আইনে ফাঁক-ফোকড় ছিল। প্রশাসন চাইলেও অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে পারত না। নতুন আইনে ফাঁক-ফোকড় বন্ধ করা হয়েছে। মাঠ প্রশাসন কঠোর হস্তে মাটি ও বালু উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে কাজ করতে পারবে। উদ্দেশ্য— কৃষিজমির সুরক্ষা। ইটভাটা টপ সয়েল নষ্ট করে দিচ্ছে। এই আইন হলে মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে।

ভূমিমন্ত্রী জানান, বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না, যদি তা উর্বর কৃষিজমি হয় বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হয়। কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি তোলা হলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়।

বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বসতবাড়ি নির্মাণ বা নিজের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে নিজের মালিকানাধীন জমি থেকে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন।