পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে দালাল নিয়ন্ত্রণ করে এডি জাকির!

উপপরিচালকের নির্দেশকে বাধাঁ প্রদান !

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

পাসপোর্ট অফিস সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হলেও চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিস বিপরীত। হয়রানির অভিযোগও দীর্ঘদিনের। দালাল সিন্ডিকেটকে কোনভাবেই দমানো যাচ্ছে না। এসব দালালদের নিয়ন্ত্রণে জড়িত স্বয়ং পাঁচলাইশ অফিসের সহকারি পরিচালক (এডি) জাকির হোসেন। তার বিরুদ্ধে উপ পরিচালকের নির্দেশকেও বাধাঁ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার ২ অক্টোবর দুপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে।

পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী দৈনিক পথেপ্রান্তরের ব্যুরো চীফ ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক পীরজাদা মো. মহরম হোসাইন জানান, রোববার নিজের পাসপোর্ট করার জন্য সহকারি পরিচালক (এডি) জাকির হোসেনের রুমে যায়। তিনি আবেদনের লেখা ভুল হয়েছে জানিয়ে অফলাইনে নতুন করে আবেদন করার জন্য বলেন। তারই কথামতো আমি অফলাইনে আবেদন করে সোমবার দুপুরের দিকে পুনরায় তার কাছে যায়। তখন তিনি আমার আবেদনটি দেখতে গড়িমসি করে রুমের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক উপ-পরিচালক (ডিডি) সাহেবকে জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়ে সাথে সাথে আমার আবেদনটি দেখে নিচ তলায় ১০৪ নম্বর রুমে জমা দিয়ে ছবি তোলার জন্য বলেন। আমি ১০৪ নম্বর রুমে আবেদনটি জমা দিয়ে ছবি তোলার প্রস্তুতি নেওয়ার মুহূর্তে রুমের ভিতরে সহকারি পরিচালক জাকির হোসেন প্রবেশ করে উপস্থিত সবার সামনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে বলেন, আমি (এডি) পাঠানো ছাড়া একটা ফাইলও জমা নিবেন না। তিনি আমার সাথে অসদাচরণ ও আমার ফাইলটা নিচে ছুড়ে ফেলেন এবং বলেন পাসপোর্ট করা হবে না। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ডিডি সাহেবকে জানালে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলেন এবং সাথে সাথে ছবি তোলার ব্যবস্থা করে দেন।

পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা একাধিক ভুক্তভোগী জানান, সেবা নিতে এসে পাসপোর্ট অফিসে হয়রানির শিকার হওয়া এটি নিত্যদিনের ঘটনা। দালাল ছাড়া সহজে মিলেনা কোনো সেবা। দালাল ছাড়া একটা পাসপোর্টও হয় না।

উল্লেখ্য বিভিন্ন সময়ে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালানো হয়। বিগত ২০২১ সালে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে দুদক অভিযান চালান। সেই তদন্তেও পাসপোর্ট অফিসের দালালের বিষয়টি সত্যতা পেয়েছিলেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে পাসপোর্ট অফিসের এক দালাল জানান, আমাদের মাধ্যম ছাড়া সরাসরি ফরম জমা করতে গেলে অফিসে বিভিন্ন ভুলের কথা বলে ফরম জমা নিবেনা তাই বাধ্য হয়ে আমাদের মাধ্যমে করা হয়। আমাদের সবার সাথে এডির সাথে চুক্তি তিনি তদারকি করেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে পাসপোর্ট অফিসের আরেক দালাল বলেন, পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের সব দালাল নিয়ন্ত্রণ করেন সহকারি পরিচালক জাকির হোসেন।

এ বিষয়ে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক তারিফ সালমান জানান, আমরা এখানে সেবা দিতে এসেছি, আজ আছি কাল নেই। এটা আপনাদের শহর, এটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, প্রত্যেককে চেষ্টা করি সেবা দিতে। তিনি (এডি) নিচে (১০৪ নং রুমে) কেন গেলেন, তার এটা করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি দুঃখজনক। আমি ব্যবস্থা নিব।