মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে মানুষ হাসে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ, শিক্ষক-কর্মচারী নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ এবং চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোট।
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, ‘‘নির্বাচন নিয়ে কেন এতো কথা বলে। আমি বুঝতে পারি না। নির্বাচন তো আমরা করছি, সুন্দর, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।’’ এই কথাগুলো শুনলে সবাই হাসে। অবৈধভাবে হোক আর যেভাবেই হোক প্রধানমন্ত্রী তো। তাও আবার ১৫ বছর ধরে আছেন। উনি কি একবারও চিন্তা করেন না যে তার এই কথাগুলো শুনলে মানুষ হাসবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ওদের এতো মাথা ব্যথা কেন।’’ ওরা মানে, আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব। ওদের মাথা ব্যথার কারণ ওরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতিতে সবাই আতঙ্কে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের ছাপ আমরা দেখতে পাচ্ছি, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুখে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, ‘এখনও আহ্বান জানাচ্ছি, অনেক কষ্ট দিয়েছেন মানুষকে। আমার অনেক ভাইদেরকে হত্যা করেছেন। অনেক স্ত্রীকে স্বামীহারা করেছেন। অনেক মাকে পুত্রহারা করেছেন। অনেক সন্তানকে পিতাহারা করেছেন। অনেক রক্ত ঝরিয়েছেন। আর নয়। এখনও সময় আছে আপনি দয়া করে বিদায় হোন। আপনারা যে অপকর্ম করেছেন, এর জবাবহিদিতা একসময় করতে হবে। তার আগেই যদি সসম্মানে বিদায় হতে চান তাহলে এখনও সময় আছে।’
ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন সংসদ আছে। কিন্তু, সেটা হচ্ছে তোষামোদি করার কারখানা। ওখানে গিয়ে তাদের একটাই কাজ আহা বেশ বেশ করা।’
দেশে বর্তমানে শিক্ষা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শিক্ষার পরিবেশ যদি উন্নতি করতে হয় তাহলে পরিবর্তন দরকার। সেই পরিবর্তন হচ্ছে, এই সরকারকে সরিয়ে দেওয়া। আজকে যে সংকট, তার মূলে একটা অগণতান্ত্রিক সরকার জাতির ওপর বেআইনিভাবে চেপে বসে আছে। এই কারণেই শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম নৈরাজ্য। আজকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় দুই পদ্ধতিতে। একটি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ঘরনার হতে হবে এবং আরেকটি হচ্ছে, টাকা দিতে হবে।’
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুগিস উদ্দিন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।