চট্টগ্রামের তরুণরা কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিসহ সরকারি সেবাসমূহ আরও সহজে পেতে চান। একই সাথে নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তরুণদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ারও আহ্বান জানান তারা।
শুক্রবার নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত “আমিও জিততে চাই ইয়ুথ ফেয়ার” এ অংশগ্রহণকারী চট্টগ্রামের একাধিক তরুণ বলেন, একদিকে চাকুরীর সুযোগ যেমন কম অপরদিকে উদ্যোক্তা হতেও রয়েছে জটিল সব প্রতিবন্ধকতা। তরুণদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সহজ ঋণসুবিধার দাবি জানান তারা। এছাড়া, সরকারের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবার মানের উন্নতি, নাগরিকদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেয়া, নিরাপদ পানি সরবরাহ, পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশা নিধনের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে তাগিদ আসে তরুণদের কাছ থেকে।
মেলায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বেশিরভাগ তরুণই রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছেন এবং তারা রাজনৈতিক আলোচনায় আগ্রহী নন, কারণ তারা মনে করেন তাদের মতামত সেভাবে গুরুত্ব পায় না। দেশের উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে, তরুণদের প্রত্যাশাগুলোকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য নীতি নির্ধারক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অংশগ্রহণকারী তরুণরা আহ্বান জানিয়ে এসব প্রত্যাশা তুলে ধরেন।
এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও যুব সংগঠনের শতাধিক তরুণ অংশগ্রহণ করেন। এসময় নাগরিক ইস্যু নিয়ে বির্তক, কুইজ ও ভিডিও বার্তা তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
ইয়ুথ ফেয়ারের অংশ হিসেবে আয়োজিত ‘আমিও জিততে চাই আঃন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা’য় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ডিবেটিং ক্লাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ডিবেটর’স অফ চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি এতে ডিবেটর অব দ্য ট্যুর্নামেন্ট হয়েছেন ডিবেটর’স অফ চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি দলের বিতার্কিক শেখ সাদিয়া । বিতর্কে মডারেটর হিসেবে ভূমিকা রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদের প্রাক্তন ডীন অধ্যাপক ডক্টর এ বি এম আবু নোমান। সংসদীয় পদ্ধতির এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিলো দৃষ্টি চট্টগ্রাম। প্রতিযোগিতায় ১৪ টি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ টি বিতর্ক দল অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বিতার্কিকরা নাগরিক ইস্যুর সমাধান বিষয়ে নানা যুক্তি ও পাল্টাযুক্তি তুলে ধরেন।
মেলায় ভিডিও বার্তা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তরুণদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়, এককভাবে ক্যামেরার সামনে দু-মিনিটে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন পরে তাদের মধ্যে তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই নাগরিক সমস্যাসমূহ তুলে ধরে ভোরের আলো নাট্যদল ‘জুলেখার জীবন’ নামে একটি মঞ্চ নাটক পরিবেশিত হয়, এর উপর ভিত্তি করে আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় ব্যাপক অংশগ্রহণ চোখে পড়ে।
মাল্টি পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ), চট্টগ্রাম এবং দৃষ্টি চট্টগ্রামের এর উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলায় সহযোগিতায় ছিলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল। ইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় “আমিও জিততে চাই”- ক্যাম্পেইনটি রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীদারদের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশা তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। দিনব্যাপী এই তারুন্যের মেলা শেষ হয় পুরুস্কার বিতরণী ও আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে, এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, আয়োজক চট্টগ্রাম মাল্টি পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সনাতন চক্রবর্তী বিজয়, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী , দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুল এবং ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর পক্ষ থেকে সিনিয়র রিজিয়নাল ম্যানেজার জনাব সদরুল আমিন। অনুষ্টান সঞ্চালনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রাম এর রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ও ডেমোক্রেসী ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রামের ইলেকটোরাল প্রোগ্রাম এসোসিয়েট তামান্না আহমেদ বহ্নি ,সার্বিক সহযোগিতা করেন অপারেশন এসিসট্যান্ট আবুল হাসান চৌধুরী রণি।