চট্টগ্রামে ২০ বছর আগে তিন ভাইবোনকে হত্যার ঘটনায় মামলায় দুই জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ কামাল হোসেন শিকদারের আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডিত আসামিরা হলো– নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার বালুচরা এলাকার আবুল কাশেম ওরফে জামাই কাশেম (৭০) ও ইউসুফ ওরফে বাইট্টা ইউসুফ (৭০)। আদালত দুই আসামিকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডেরও আদেশ দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিল।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এম এ ফয়েজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এ মামলায় অপর দুই আসামি শিবির ক্যাডার গিট্টু নাসির ও ফয়েজ উল্লাহ ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ায় এ মামলা থেকে তাদের আগেই অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানামুলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।’
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২৯ জুন নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন দক্ষিণ পাহাড়তলীর বালুচরা এলাকায় ৩৬ শতক জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে হত্যার শিকার হন তিন ভাইবোন সাইফুল, আলমগীর ও মনোয়ারা বেগম।
নিহতদের সঙ্গে আসামি ইউসুফ ও কাশেমের বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন ২০০৪ সালের ২৯ জুন সাইফুলের বাড়িতে আসামিরা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা করে। আসামিদের দেখে মনোয়ারা বেগম চিৎকার দিলে তাকে প্রথমে গুলি করে ফয়েজ উল্লাহ। এতে মনোয়ারা ঘটনাস্থলেই মারা যান। বোনের চিৎকার শুনে আলমগীর ঘর থেকে বের হলে আসামি ইউসুফ ফয়েজকে গুলি করার নির্দেশ দেয়। সঙ্গে সঙ্গে আলমগীরকে গুলি করে ফয়েজ। আলমগীর পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর পর সাইফুল ঘর থেকে বের হলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় সাইফুলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার শিল্পী বাদী হয়ে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০০৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আসামি ইউসুফ ও কাশেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ২০১৭ সালের ৫ জুলাই বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।