কেএসআরএম’র দখলে রেলের পুকুর-জলাশয়

কেএসআরএম’র দখলে রেলের পুকুর-জলাশয়।

শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম’র দখলে রেলের পুকুর-জলাশয়, প্রচলিত নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে পাম্প বসিয়ে পানি তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (পূর্ব), ডিআরএম চট্টগ্রাম, আরএনবি ও আমিন/কানুনগোকে চিঠি দিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা জিসান দত্ত।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গত ১০ জানুয়ারি চিঠিতে স্বাক্ষরকারি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা (ডিইও) জিসান দত্ত বলেন, সীতাকুণ্ডে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া রেলের পুকুর জবরদখল করে অবৈধভাবে শক্তিশালী পাম্প বসিয়ে জলাশয়ের পানি তুলে নিয়ে যাচ্ছে কবির স্টীল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম) নামের একটি শিল্প গ্রুপ। যেহেতু রেলের জমি জবরদখল করে রাখার কোন সুযোগ নেই। তাই এটির সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে স্থানীয় থানায় মামলা করতেও বলা হয়েছে।

সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় এফআইআর দায়ের করে অবৈধ স্থাপনাদি অপসারন/উচ্ছেদের নিমিত্তে অবৈধ দখলদারদের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, দখলীয় ভূমির পরিমান, স্থাপনার আকৃতি, নকশাসহ পূর্নাঙ্গ তালিকা জরুরী ভিত্তিতে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চিঠির বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থার জন্য গত ৪ ফেব্রুয়ারি আমিন কাননগোকে তদন্ত করে প্রতি
বেদন দিতে বলা হয়েছে।
তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট আমিন কাননগো মো. আব্দুস সালাম বলেন, কেএসআরএম নামক একটি শিল্প গ্রুপ অবৈধভাবে রেলের জলাশয়ে পাম্প বসিয়ে পানি তুলছে এমন একটি বিষয় তদন্ত করতে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে খুব শীঘ্রই প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী বলেন, ”কেএসআরএম’এর মতো একটি কোম্পানী রেলের পুকুর দখল করে রাখবে অন্যায়ভাবে পানি তুলে নিয়ে যাবে তা হতে পারেনা। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি, অলরেডি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে মামলা করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলের মালিকানাধিন রেলের পুকুর জবরদখল করে অবৈধভাবে শক্তিশালী পাম্প বসিয়ে জলাশয়ের পানি তুলে নিয়ে যাচ্ছে কবির স্টীল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম) নামের একটি শিল্প গ্রুপ। দীর্ঘদিন রেলওয়ের পুকুরটি জবরদখল করে রাখায় একদিকে যেমন মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি সেবামুলক এই সংস্থাটি, অন্যদিকে মারাত্মক হুমকীর মুখে পড়ছে পরিবেশ। রেল কর্তৃপক্ষের জ্ঞাতসারেই তারা এই অপকর্ম করছে জানালেও রেল সংশ্লিষ্টরা বলছে তারা জানে না। সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে কেএসআরএম এই কাজটি করছে।

জানা যায়, কয়েকটি পুকুরের মধ্যে যেখানে একটি পুকুর স্থানীয় একটি মসজিদের মুসুল্লিরা ব্যবহার করছে। অপর একটি পুকুর মামলার জালে আইনি জটিলতায় ইজারা দিতে পারছেনা রেলওয়ে। আরেকটি বড় পুকুর দখল করে রেখেছে শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম। শুধু দখলই নয়, প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পাড়ে বসানো হয়েছে শক্তিশালী পাম্প। যেটা দিয়ে নির্বিচারে পুকুরের পানি তুলে নিয়ে যাচ্ছে এই গ্রুপটি।