মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা আজ সোমবার (১৭ জুন) অনুষ্ঠিত হবে। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করবেন।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীসহ বিশ্বমুসলিমদের আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন।
এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান ঈদ জামাতে অংশ নেবেন। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান। এই ঈদ জামাতে মোকাব্বির হিসেবে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকার এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক মূল ক্বারী হিসেবে প্রধান ঈদ জামাতে দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর গোলারটেক মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়। এলাকাবাসীর সঙ্গে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ডিএনসিসির কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তারা এই জামাতে অংশগ্রহণ করবেন।
এবারও কিশোরগঞ্জে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে ১৯৭তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। রোববার সকাল ৯টায় শুরু হবে এই ঈদ জামাত। এ ঈদগাহে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
প্রতি বছরের মতো এবারও বাইতুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের নামাজের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, এখানে প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় ৮টা, তৃতীয় ৯টা, চতুর্থ সকাল ১০টা এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, সকাল ৭টায় অনুষ্ঠেয় প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ ক্বারি মো. আতাউর রহমান।
সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন এই মসজিদের খাদেম আব্দুল হাদী।
সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী। এতে মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।
সকাল ১০টায় চতুর্থ জামাতে ইমামতি করবেন জামেয়া আরাবিয়া মিরপুরের মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররমের খাদেম রুহুল আমিন।
সকাল পৌনে ১১টায় পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইমামতি করবেন ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আক্তার মিয়া।
ওই পাঁচটি জামাতের কোনোটিতে ইমাম উপস্থিত না থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাইকোর্ট মাজার মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. আশরাফুল ইসলাম।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। চিফ হুইপ, হুইপরা, মন্ত্রি পরিষদের সদস্যরা, সংসদ-সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা জামাতে অংশ নেবেন। এ ছাড়া এই জামাত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। জামাতে সর্বস্তরের মুসল্লিদেরকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামি’আয় পবিত্র ঈদুল আজহার দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম ড. সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন এবং দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন সিনিয়র মুয়াজ্জিন এম ডি এ জলিল।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদে সকাল ৭টায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল লনে সকাল ৮টায় এবং ঈশা খাঁন আবাসিক এলাকার মসজিদে সকাল ৭টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সারাদেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং সরকারি সংস্থাগুলোর প্রধানরা জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচি প্রণয়ন করে ঈদ উদযাপন করবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমসমূহ যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। ঈদ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সকল হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোতে যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। এ উপলক্ষে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রক্ষার্থে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কোরবানির পর পশুর রক্ত বা বর্জ্য যেন পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয়, সে বিষয়ে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ দেশের সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান। ঈদুল আজহার পূর্ববর্তী জুমার খুতবায় এ বিষয়ে মুসল্লিদের সচেতন করা হয়েছে।